বর্তমানে, বিশ্বের একটি জনপ্রিয় CMS (Content Management System) ব্লগিং প্লাটফর্ম হলো ওয়ার্ডপ্রেস। যা খুব সহজেই নিজের হোস্টিং একাউন্টে ইন্সটল করে একটি সুন্দর ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। তো যারা ব্লগিং করেন কিংবা নিজের একটা-দুইটা ওয়েবসাইট আছে তাদের কাছে ওয়ার্ডপ্রেস নতুন কিছু নয়। আবার ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে সাইট বানিয়ে বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটের এফিলিয়েশন করছেন এরকম মানুষের সংখ্যাও দিন দিন বেড়েই চলছে।
তাই আমরা যারা ওয়ার্ডপ্রেস সাইট ব্যবহার করি । আমরা কখনো চাইনা আমাদের ওয়েবসাইট টি স্লো থাকুক। তাছাড়া, গুগলের সার্চ র্যাঙ্কিং এর অনেক বড় একটা ফ্যাক্টর হলো এই সাইট স্পীড। কাজেই আপনার ওয়ার্ডপ্রেসের সাইট স্পীড অপ্টিমাইজেশনের প্রয়োজনীয়তা অনেক।
প্রথমেই আপনার ওয়েবসাইটের বর্তমান লোডিং টাইম বিশ্লেষণ করে নিন। ওয়েবসাইটি লোড হতে কতো সময় লাগে তা চেক করার জন্য গুগল সার্চ করে অনেক পেইড ও ফ্রি টুলস পাবেন। তবে নিচে আমরা কিছু ফ্রী টুলস উল্লেখ করেছি। যেগুলো টুলস দিয়ে আপনি সহজেই আপনার ওয়েবসাইটের বর্তমান লোডিং টাইম জেনে নিতে পারবেন।
তাহলে চলুন এবার নিচের আলোচনা থেকে জেনে নেওয়া যাক, কিভাবে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের স্পিড বৃদ্ধি করা যায়? সে সম্পর্কে বেশকিছু কার্যকরী পদ্ধতি ফলো করে।
আপনার সাইটের লোডিং স্পিড কম হওয়ার অন্যতম কারণ হলো নিম্ন মানের হোস্টিং কোম্পানি হতে কোন হোস্টিং প্যাকেজ নেওয়া। তাই, হোস্টিং প্যাকেজ কেনার আগে অবশ্যই সেই হোস্টিং কোম্পানির সার্ভিস সম্পর্কে ভালোভাবে যাচাই করে তারপর ক্রয় করুন। বিদেশি হোস্টিং কোম্পানির পাশাপাশি বাংলাদেশেও অনেক ভালো মানের হোস্টিং কোম্পানি রয়েছে। যেখান থেকে আপনি সহজেই বিকাশ, রকেট ও অন্যান্য পেমেন্ট মেথড দিয়ে আপনার সাইটের জন্য একটি নির্ধারিত হোস্টিং প্যাকেজ কিনতে পারবেন।
কিভাবে একটি ভালো মানের হোস্টিং কিনবেন? জানতে এই পোস্ট টি পড়তে পারেন।
একটি ওয়ার্ডপ্রেস সাইট তৈরিতে থিম নির্বাচন খুবই গুরত্বপূর্ণ। কেননা, ভিজিটররা এটাকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। অনেক সময় থিম ডেভেলপাররা সাধারণত স্পিডের চেয়ে এসথেটিক্সের উপর বেশি নজর দেন। তাই থিমগুলো হয়ে পরে ভারী। তাই এমন থিম বাছাই করুন যেটা কিনা দেখতে স্টাইলিশ , একই সাথে হাল্কা এবং দ্রুত কাজ করে থাকে।
বর্তমানে বহুল ব্যাবহৃত একটি পেইড থিম হলো Avada যেটা চাইলে আপনি ব্যাবহার করতে পারেন। আর আপনি যদি কোন ফ্রি থিম ব্যবহার করতে চান তাহলে এক্ষেত্রে অবশ্যই থিমের রিভিউ দেখে নিবেন। এতে করে আপনি ঐ ফ্রি থিম ব্যবহার সম্পর্কে একটা ভালো আইডিয়া পাবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে বেশি বড় আকৃতির ইমেজ দিলে সাইট ভারি হয় যা কিনা সাইটের লোডিং টাইমে একটা বড় প্রভাব ফেলে। তাই সাইটে ইমেজ আপলোডের ক্ষেত্রে এমন ছবি (Image) আপলোড করুন যার সাইজ তুলনামূলক ভাবে কম এবং সেই সাথে কোয়ালিটিও ভালো । আপনি দুই ভাবে এই ইমেজ অপ্টিমাইজেশন এর কাজ টা করতে পারবেন। প্রথমত, সাইটে নির্ধারিত প্লাগিন ( যেমন- WP Smushit ) ব্যাবহার করে ইমেজ আপলোড করার সময় ইমেজকে অপ্টিমাইজ করে নেওয়া এবং দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন এডিটিং সফটওয়্যার যেমন- এডোবি ফটোশপ, জিম্প ইত্যাদি দিয়ে আগেই ইমেজকে অপ্টিমাইজ করে তারপর সাইটে আপলোড করা ।
ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে প্লাগিন ব্যবহার করার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম । তার মানে এই নয়, যে আপনি অপ্রয়োজনীয় প্লাগিন ব্যবহার করবেন । তাই যথাসম্ভব, সঠিক ও কম প্লাগিন ব্যবহার করুন । এছাড়া বেশ কিছু প্লাগিন আছে যা কিনা আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের লোডিং স্পিড কমিয়ে দিতে পারে। তাই প্লাগিন ইন্সটল করার পূর্বে সেসব প্লাগিনের রিভিউ ও রেটিং গুলো দেখে নিন।
চাইলে প্লাগিন ব্যবহার করা ছাড়াও, কোডিং এর মাধ্যমে ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের অনেক কাজ শেষ করতে পারবেন।
সাধারনত, ক্যাসিং প্লাগিন (Caching Plugin) ব্যাবহারের ফলে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইটকে আরও দ্রুত লোড হওয়ার সুবিধা দিবে। নিচে দুটি জনপ্রিয় ওয়ার্ডপ্রেস ক্যাসিং প্লাগিন এর নাম দেওয়া হলো-
পাশাপাশি সিডিএন বা কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক (CDN – Content Delivery Network) ব্যাবহারের ফলে আপনার সাইটের যাবতীয় কনটেন্ট ( যেমন- Text, Images, Html প্রভৃতি) হোস্টিং সার্ভার থেকে নিয়ে দ্রুততর উপায়ে ব্যবহারকারীর নিকট পৌঁছে দেয়। এতে আপনার মেইন সার্ভারে চাপ কম পড়ে এবং সাইট ফাস্ট হয়। স্পিড বাড়ানোর জন্য দুটি জনপ্রিয় সিডিএন হলো-
ওয়ার্ডপ্রেসের ডিফল্ট অপশন হিসেবে আপনি যতবার পোস্ট এডিট বা আপডেট করবেন ততবার একটা রিভিশন ফাইল ডাটাবেইজে সেইভ হয়ে যাবে। এর সুবিধা হলো যাতে আপনি যদি কোন ভুল করেন তাহলে সেটা রিভিশন কপি থেকে আবার কনটেন্ট পুনরুদ্ধার করতে পারেন। আর অসুবিধা হলো ডাটাবেইজে অহেতুক ডাটা জমে যাবার কারনে কোয়েরি করতে সময় বেশী লাগে এবং সাইট স্লো হয়ে যায়। যার জন্য অনেক ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগইন (WP-Optimize, WP DBManger) আছে যেগুলো আপনার ডাটাবেজকে এই সব অপ্রয়োজনীয় ডাটা হতে মুক্ত রাখবে। সেই সাথে ট্রাই করতে পারেন পোস্ট রিভিসন প্লাগইন (Revision Control Plugin).
আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইট স্পিড এর জন্য ব্যাবহৃত থিম, প্লাগিন এবং ওয়ার্ডপ্রেস ভার্সন সর্বদা আপডেট রাখুন। সাধারণত, অনেক সময় ওয়ার্ডপ্রেস ভার্সন আপডেট এর ফলে ব্যাবহৃত থিম ও প্লাগিন এই আপডেটে কাজ নাও করতে পারে । এক্ষেত্রে যতদিন পুরোপুরি একটা ভার্সন পরিবর্তন না হয় ততদিন দেরি করে সেই ওয়ার্ডপ্রেসের ভার্সনটি আপডেট করুন । এতে করে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইটটি স্লো এবং হ্যাক হওয়া থেকে বেঁচে যাবে। তবে প্রতিটি আপডেটের আগে অবশ্যই সাইটের ব্যাকাপ নিতে ভুলবেন না
এছাড়া, হোমপেইজ অতিরিক্ত ও অহেতুক কোন কন্টেন্ট না রাখা, পোস্ট রিভিশন এর নাম্বার লিমিট করে দেয়া, প্লাগইন এর পারফর্মেন্স পর্যবেক্ষণ করার মাদ্ধমে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইটেড় স্পিড বাড়াতে পাড়বেন।
ই-কমার্স কি? কিভাবে ই-কমার্স ওয়েবসাইটের জন্য সেরা ডোমেইন ও হোস্টিং কিনবেন?
আশা করি উল্লেখিত টিপসগুলো মেনে চললে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের লোডিং স্পিডের উপর কোন প্রভাব পরবে না। লেখাটি পড়ে আপনার ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না। যদি এ সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন থেকে থাকে, তাহলে নিচে কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন।
“Only You can change Your life.
No one can do it for You”
ই-কমার্স ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা এখন শীর্ষে। অনলাইন বিজনেস সফলভাবে প্রতিষ্ঠিত করার অন্যতম মাদ্ধম হচ্ছে ই-কমার্স। যেকোন…
ই-কমার্স বর্তমান সময়ে অনলাইনে কেনাকাটার জন্য অনেক জনপ্রিয় একটি প্লাটফর্ম। ইন্টারনেটের যুগে ঘরে বসেই সবকিছু…
ব্যবসা কিংবা পারসোনাল ব্রান্ডিং হোক ডিজিটালি প্রেজেন্স বর্তমানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর ডিজিটাল এই দুনিয়ায় ওয়েবসাইট…
প্রত্যেক ওয়েবসাইট ওনারদের কাছে ডোমেইন হোস্টিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ওয়েবসাইটের গুরুত্ব বর্তমানে এতোই যে প্রতিটা…
USA তে প্রতিবছর নভেম্বরের ৪র্থ বৃহস্পতিবার পালিত হয় Thanksgiving Day, আর এই থ্যাংকসগিভিং ডে এর…
গুগল তাদের সাম্প্রতিক প্রতিটি আপডেটে পেইজ স্পীডের উপর অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া শুরু করেছে। তাদের…